সন্দীপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম:
বিক্ষিপ্ত কয়েকটা ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট পর্ব মিটল ঝাড়গ্রামে। কোথাও বুথ জ্যাম, ভোট বাক্স লুঠ, তৃণমূল কর্মীকে মারধর, বুথের ভেতরে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অন্যদিকে বিজেপির পাল্টা অভিযোগ রাস্তা অবরুদ্ধ করে ভোটারদের ভোট গ্রহন কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া, বুথ জ্যাম, বিজেপি কর্মীকে মারধর, ভয় দেখিয়ে বিজেপি এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে দেওয়া, ভোট বাস্ক লুঠ করার অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে। ১৪ই মে এই ভাবেই শাসক দল সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গুলি একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। শাসক দলের অভিযোগ বিজেপি বাইরের থেকে লোক নিয়ে এসে, টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ভোট বাস্ক লুঠের চেষ্টা করেছে বিজপির লোকজনেররা। এই ঘটনায় চার পাঁজ জন তৃণমূল কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে বলে দাবি শাসক দলের। পাল্টা বিজেপির অভিযোগ শাসক দলের লোকজনেরা বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির এজেন্টদের মারধর করে তাদেরকে বুথের ভেতরে থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সুত্রে জানা যায়, বেলপাহাড়ী অঞ্চলের কেচন্দা বুথে তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থী উজ্জ্বল দত্তের এজেন্টকে মারধর করে ভোট বাক্স চুরি করে নিয়ে পালানোর সময় প্রতিরোধ করতে গেলে তৃণমূলের এজেন্ট চিরঞ্জীব দত্তকে লক্ষ করে ভোট বাক্স ছুঁড়লে তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। এবং বেলিয়াবেড়া থানার কালিঞ্জা অঞ্চলের ডাংরিয়া এলাকার রাস্তা অবরুদ্ধ করে তৃণমূলের লোকজনেদের ভোট গ্রহন কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। আবার লালগড়ের ধরমপুর অঞ্চলের গহমিডাঙ্গা বুথে তৃণমূলের এজেন্টে লক্ষ করে ইট পাটকেল ছুঁড়ার অভিযোগ। যার ফলে প্রায় এক ঘন্টা ধরে ভোট প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পুনরায় ভোট গ্রহন পর্ব শুরু করেন। জাম্বনী থানার কাপগাড়ী অঞ্চলের বেড়াগাড়ী বুথে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের মারধর করে চোখ উপড়ে নেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দুই তৃণমূল কর্মী গুরুতর ভাবে আহত হয়। তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপি সুত্রে জানা যায়, এদিন ভোট শুরু হওয়ার পরেই নয়াগ্রাম ব্লকের মলম অঞ্চলের চালতাবেরা বুথে জ্যাম, রাস্তা অবরোধ করে রাখার অভিযোগ। ছোটো ঝরিয়া ও জামিরাপাল ও বালিগেড়িয়া বুথে বিজেপির প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের মারধর করে বলে অভিযোগ। বেলপাহাড়ী বুথে ভোটারদের টাকা দিয়ে প্রভাবিত করার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবং জাম্বনী ব্লকের ধড়সা অঞ্চলের বাবুইদা বুথে বিজেপির এজেন্টকে ভয় দেখিয়ে বুথ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে।
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, বিজেপির বাইরের থেকে লোক নিয়ে এসে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। আমাদের কর্মীরা ঠান্ডা মাথায় খুব সামাল দিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বিজেপি টাকা দিয়ে ভোটারদের কেনার চেষ্টা করেছে। গোটা জেলায় বেশ কয়েকটা গণ্ডগোল হয়েছে তাতে দশ বারো জন আহত হয়েছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, শাসক দল অশান্তি করেছে। পুলিশ ও শাসক দল মিলে ছাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সেই সময় আমাদের কর্মীরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে তাদেরকে মারধর কর তৃণমূলের লোকজন। বেশ কিছু জায়গায় দু চারজন আহত হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের মহকুমা শাসক নকুল চন্দ্র মাহাত বলেন, মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে।পাশাপাশি নিজের গ্রামে আমলাচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে ভোট দিয়েছেন অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী চুরামনি মাহাত, ভোট দিলেন ছত্রধর মাহাতর স্ত্রী নিয়তি মাহাত।