ওয়েবডেস্ক, বেঙ্গল টুডেঃ
৩০শে এপ্রিল দুপুর ১২টা নাগাদ হুগলীর দেবানন্দপুরে নিজের বাড়িতে আত্মঘাতী মৌপ্রিয়া মিত্র(১৬)। ঘটনার জেরে শোকস্তব্ধ বাংলার সাঁতারমহল এবং ক্রীড়াজগৎ।
সুত্রে খবর, মৌপ্রিয়ার বাবা ভাস্কর মিত্রের কাজকর্ম বিশেষ কিছু ছিল না। মা প্রাইভেট শিক্ষক। তাঁর রোজগারেই কোনওরকমে চলত মৌপ্রিয়াদের সংসার। ঘটনার দিন সকালেও মৌপ্রিয়া ওর মায়ের সঙ্গে হেসে গল্প করছিল। তারপর ১২টা নাগাদ নীচে ঠাকুমার ঘরে খেতে নেমেছিল। তখন ঠাকুমা ছিলেন না। মৌপ্রিয়া দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপরই গলায় ফাঁস দেয় সে। সঙ্গে সঙ্গে মৌপ্রিয়ার মা-বাবা দুজনেই বন্ধ দরজা ভেঙে কৃত্রিমভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন মৌপ্রিয়ার শ্বাস ফেরাতে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে তাঁদের সেই প্রচেষ্টায়।
এছাড়া আরও জানা যায়, গত চার বছর ধরে সে কলকাতার সেন্ট্রাল সুইমিং ক্লাবে ট্রেনিং করছিল কোচ নিমাই ভৌমিকের কাছে। কিন্তু এদিনের এই ঘটনার পরে নিমাই ভৌমিক বললেন, "আমি ভাবতে পারছি না। গত শনিবারও আমার কাছে ট্রেনিং করে গিয়েছে। ২০১৫ থেকেই ও জাতীয় স্তরে পদক জিতে আসছে। তাছাড়া, গত চার বছরে ওকে একদিনও কোনও কারণে বিমর্ষ বা হতাশ হতে দেখিনি। প্রায় ৬ ঘণ্টা করে ট্রেনিং করত। স্বপ্ন দেখত ডাইভিং করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।"
প্রসঙ্গগত কলম্বোয় ২ বছর আগে সাফ সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে ডাইভিং সোনা এবং স্প্রিং বোর্ডে রুপো জিতে সাড়া জাগিয়েছিল মৌপ্রিয়া। এমনকি আগামী ২৬শে জুন থেকে শুরু হতে চলা সাব-জুনিয়র জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপেও তার পদকের ভরসায় তাকিয়ে ছিল বাংলার সাঁতারমহল। তবে এদিনের ঘটনায় শোকস্তব্ধ বাংলার সাঁতারমহল সহ ক্রীড়াজগৎ।
রাজ্য সাঁতার সংস্থার প্রেসিডেন্ট রামানুজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "মৌপ্রিয়া বাংলার সেরা ডাইভার হয়ে উঠেছিল। আমাদের আর এক অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মহিলা সাঁতারু তনুকা ধারার মতো অকালেই চলে গেল।"