ওয়েবডেস্ক, বেঙ্গলটুডে, কোলকাতাঃ
এতদিন যিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, এতদিন যাঁকে প্রতিটি দলীয় কর্মসূচি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক ফ্রেমে দেখা যেত, সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ই অনুপস্থিত দলের কোর কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। আর তা দেখেই জল্পনার পারদ চড়ল রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি মেয়র পদ থেকে সত্যিই ইস্তফা দিচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়! খোয়াতে চলেছেন মন্ত্রিত্বও!
সব কিছু এই ভাবে চললে বুধবারই পদত্যাগ করতে চলেছেন কলকাতার মন্ত্রী কাম মেয়র। তবে এখনও আশা রয়েছেন দিদি যদি ফের ভাইকে ডেকে নেন। অবশ্য আজও মেয়রের বাড়িতে কর্পোরেশনের ফাইল সই করাতে যান মেয়র ঘনিষ্ট তিন কাউনসিলার কিন্তু তাদেরকে ফিরিয়ে দেন মেয়র। পরবর্তি কলকাতার মেয়র হতে চলেছেন মেয়র পারিষদ দেবাশিষ কুমার।
এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা যখন তুঙ্গে, তখন শুক্রবার বিকেল নবান্নে পুর কমিশনার ও মেয়র পারিষদদের আনাগোনা অন্য মাত্রা দেয় জল্পনায়। যাই হোক, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এ ব্যাপারে কেউই কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় মেয়র পদ ছেড়ে দিতে চাইছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
সম্প্রতি মেয়র পারিবারিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছেন স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে। একই সময়ে দলনেত্রীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। আর তা প্রকট হয়ে ওঠে মেয়রের নিরাপত্তা রাতারাতি কমিয়ে দেওয়ায়। তাঁর জেড প্লাস নিরাপত্তা এক লহমায় সাধারণ পর্যায়ে নামিয়ে ছাড়ে রাজ্য প্রশাসন। পরে অবশ্য মেয়রের কান্নাভেজা চোখ দেখে মেয়র-মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাসের নিরাপত্তা জেড ক্যাটাগরিতে রূপান্তরিত করা হয়।
এরপর মনে করা হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী নমনীয় হয়েছেন তাঁর স্নেহের কাননের প্রতি। কিন্তু শুক্রবারের কোর কমিটির বৈঠক ফের অন্য জল্পনার অবতারণা করে গেল। মেয়র দিনভর কলকাতা পুরসভায় থেকেও গেলেন না কোর কমিটির বৈঠকে। জানা যায়, মেয়র অসুস্থ বলেই কোর কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। কিন্তু বিশেষ সূত্রে জানা যায় মেয়র নাকি বিকেলের পর থেকেই সুস্থ! কোর কমিটির বৈঠক শেষ হওয়ার খানিক বাদেই মেয়র কলকাতা পুরসভায় আসেন তিনি। অসুস্থতা তাহলে কি শুধু কোর কমিটির বৈঠক এড়ানোর কৌশল মাত্র! তারপর পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য পাঁচ সদস্যের মনিটরিং কমিটিতেও তাঁর স্থান না হওয়ায় জল্পনার পারদ আরও চড়ে যায়। রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডাকা হওয়ায় অন্য গন্ধ পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল।
সূত্রের খবর অনুযায়ী কলকাতার পরবর্তি মেয়র কে হবেন সেই বিষয়ে কালীঘাটে নেত্রীর বাড়িতে একটি কিচেন ক্যাবিনেট মিটিং হয়েছে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নেত্রী ছাড়া সুব্রত বক্সি
অরূপ বিশ্বাস, ববি হাকিম, সুব্রত মুখার্জি প্রমুখ। তবে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা নিঃশন্দেহে মুকুলের পর আবার বড়ো উইকেট নিতে চলেছে অমিত শাহ।