ওয়েবডেস্ক, বেঙ্গল টুডেঃ
কয়েকদিন ধরে একটানা গরমে কার্যত নাকাল অবস্থা শহরবাসীর। আর একই অবস্থা জেলাগুলিতেও। গ্রীষ্মে না হলেও আষাঢ়ে রেকর্ড গরমে গত মঙ্গলবার ৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। তারমধ্যে একজনের মৃত্যু হয় কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকায়।
মূলত পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে একটানা চলছিল তাপপ্রবাহ। পারদ ঘোরাফেরা করছিল ৪০ ডিগ্রির ওপর। ফলে সাধারণ মানুষ চাতকের মত চেয়েছিলেন আকাশের দিকে আর মনে মনে একটু বৃষ্টির জন্য কাতর প্রার্থনা করছিলেন। সেই চরম গরম থেকে সাময়িক রেহাই দিয়ে গত মঙ্গলবারই উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় ঝেঁপে বৃষ্টি নামে। কলকাতার আকাশেও ছিল মেঘের আস্তরণ। তবে তাতে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার চিত্রটা বদলায়নি। কষ্ট বজায় ছিল পুরোদমে।
এরপর ২০ শে জুন সকালেও চড়া রোদে পুড়েছে কলকাতা। যদিও বেলা বাড়তে ছবিটা বদলাতে শুরু করে। ক্রমশ আকাশে কালো মেঘ জমতে শুরু করে। তারপর শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। গুমোট গরম কাটিয়ে স্বস্তির বৃষ্টি হল মহানগর কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ কয়েকটি জেলায়। এদিনের এই বৃষ্টিতে গরমের সেই ঝলসে দেওয়া অনুভূতি গায়েব। অনেকটাই পড়েছে পারদ। বৃষ্টির ফলে সুন্দর ঠান্ডা হাওয়া ছিল রাস্তায়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিহার এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। সেই কারণেই জলীয় বাষ্প প্রবেশ করছে রাজ্যে। রাজ্যের উপরে এখন বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছে। তাই স্বস্তির বৃষ্টিতে তাপমাত্রার পারদ কমেছে। এমনকি আগামী চার দিন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা এবং মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে কলকাতার বেশ কয়েকটি অংশে। পাশাপাশি কয়েকটি জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে তেমনই আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই তাপমাত্রাও আরও খানিকটা কমবে বলে জানিয়েছে। কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার দাপট চলবে। হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া এদিন পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃষ্টি হয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশার ভুবনেশ্বর ও কটকের বেশ কয়েকটি এলাকায়। সিকিমের বেশ কয়েকটি জায়গায় আগামী দু’দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিন এমন সময়ে বৃষ্টি নামে যে সময়ে অনেকেই অফিসমুখী বা দরকারি কাজে বাড়ির বাইরে। তাঁরা কিন্তু বিরক্ত হওয়ার বদলে এদিনের বৃষ্টি উপভোগ করেছেন। অন্তত গরম থেকে রেহাই তো মিলল। এটাই বা কম কিসের।